Saturday, June 21, 2014

স্মৃতির বৃষ্টিচারণ

এইইইই বৃষ্টি-
স্মৃতির সৌধ ধৌত করে দিয়ে যাও,
মনের আঁধারে-আড়ালে-আবডালে প্রচুর ময়লা,
প্রচুর ময়লা জমে গেছে;
স্মৃতির সৌধ ধৌত করে দিয়ে যাও।
স্মৃতির সিড়ি বেয়ে যাতে তুমি ঊঠে আসতে না পারো,
তাই ধুয়ে রেখে যাও,
পিচ্ছিল করে রেখে যাও প্রতিটি পদক্ষেপ।
মনে আছে?
একবার বৃষ্টিতে তুমি-আমি,
আমি মেঘমেদুর গগনে তাকিয়ে,
পৈশাচিক চিৎকার করে ডেকেছিলাম তোমায়।
নিজের চিৎকার শুনে মনে হয়েছিলো,
মঙ্গোলীয় যুদ্ধ-দল ডংকা বাজাচ্ছে,
এতোটা পৈশাচিক!
এতোটাই অমানবিক!
তুমি শুনলে না,
অজুহাত দিলে বৃষ্টির শব্দে শুনতে পাও নি।
এইইই বৃষ্টি-
তোমাকে আমি ক্ষমা করবো না।
আর হ্যাঁ, যাওয়ার সময়,
স্মৃতির সৌধ ধৌত করে দিয়ে যেও।
বরিষধারা বেয়ে নেমে যাচ্ছে,
সদ্য শেষ হওয়া গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ে যাওয়া চামড়া বেয়ে।
তোমার কি কিছু মনে পড়বে?
ডিমেনশিয়ার রোগী হয়েই থাকো,
আর হ্যাঁ, যাওয়ার সময়,
স্মৃতির সৌধ ধৌত করে দিয়ে যেও।
উফফফ!
মনে রেখ যখন বৃষ্টি ধরায় নামে;
আর এক ফোঁটা ভালোবাসা নয়,
আর এক ফোঁটা অহংকার নয়,
শুধু ফোঁটায় ফোঁটায় বৃষ্টি ঝরবে,
ঝরতেই থাকবে,
ঝরতেই থাকবে।
টঙ্গী, গাজীপুর।
২২শে জুন, ২০১৪।

Sunday, June 15, 2014

হে অসভ্য সভ্যতা

হে অসভ্য সভ্যতা,
তোমাকে উদ্দেশ্য করে কতগুলো চিঠি লিখেছি।
তখন বুঝেছি, তোমার চিঠি পড়ার যোগ্যতা আছে,
কিন্তু চিঠি পড়ার মত মন নেই।
তবুও এই চিঠি লিখে যাবো,
হয়তো শেষ বারের মত, অথবা বারবার।
কেনো? জানতে চাইবে তুমি, নির্ঘাত।
তোমার মত এরকম প্রাণহীণ কিছুকে ভালোবাসাটা
একটা অভাব পূরণ ছাড়া কিছুই ছিলো না।
কখনই দিতে পারো নি সেই টুকু;
আমি ঘৃণা করেই যাবো তোমায়।
আর হাতের নাগালে থাকবো না তোমার,
অসভ্য হয়ে গেলেই ভুলে যাবে আমায়,
হয়তো শেষ বারের মত, অথবা বারবার,
তাই, এই সভ্যতা থেকে নিতে চাই বিদায়।
ইতি,
এক সুখী অসভ্য।
-গাজীপুর, ২০১৪।

অধিকার নাই

সবকটা জোনাকী পোকাকে টিপে মেরে ফেলতে চাই,
এই অসভ্যতার মিছিলে ওদের আলো দেয়ার অধিকার নাই;
সবকটা গাংচিলকে হাঙ্গরের পেটে চালান দিতে চাই,
এই জলাঞ্জলির সৈকতে ওদের কোন ঠাই নাই;
অন্তিম সংস্কার, জরুরী দরকার,
বানানো অধিকার, হারানো স্বাধিকার।
চলো সবাই জঙ্গলে চলে যাই,
যেখানে ছিঃ ছিঃ টিভি ক্যামেরা নাই।
জোনাকী পোকারা আছে, আর
শুধু চাঁদই আলো দেয় রাতে,
সূর্য্য ঘুম থেকে ওঠায় প্রাতে।
সবকটা জোনাকী পোকাকে টিপে মেরে ফেলতে চাই,
এই অসভ্যতার মিছিলে ওদের আলো দেয়ার একদমই অধিকার নাই।
১২ই জুন, ২০১৪, গাজীপুর।

আক্রমন

বেনজীর আহমেদ
লাত্থি দিয়ে নামিয়ে দেব কিওকারাডং পাহাড়,
ঐ পাহাড়ের সব হরিণ আজকে আমার আহার৷
সাংগু থেকে মাতামুহুরী, খুঁজতে লাগবে রুমাল,
বানের রূপে কান্নার স্রোত, এবার তবে সামাল৷
অনন্যতার অপরূপে সিংহ তোলে হুঙ্কার,
মাথার ভিতর স্নিগ্ধ-উড়াল ঝঙ্কার।
শান্তির নামে পরিবর্তন, অন্য রকম আঁধার,
ভালো লাগার আত্মহনন, শতসহস্র বাধার।
মাথার ভেতর যুদ্ধ যুদ্ধ, অনন্ত জিঘাংসার,
লুপ্ত কোন ধ্বংস অবতার।

আজ তোমাকে বলতেই হবে

আরে আমি কি কম নাকি???
কি নেই আমার?
বল।
বল সোনামনি লক্ষ্মী।
কি নাই আমার?
ঝাড়খন্ডের দোমড়ানো ঝড়ের রাতে দুলতে থাকা ঝাড়বাতির দোহাই,
আজ তোমাকে বলতেই হবে।
গভীর কালাহারির ঝমঝম করতে করতে নড়তে থাকা সজারুর কাটার দোহাই,
আজ তোমাকে বলতেই হবে।
কি নেই আমার?
আমি তোমাকে ছিনতাই করে বেচে দেবো, সেই ভয়?
আজ যদি তুমি না বলো,
তোমাকে বেঁচে দেবো অজানা কামরূপ কামাক্ষ্যার বাজারে।
আজ তোমাকে বলতেই হবে।
কি নেই আমার?
হাহ হাহ হাহ!
ছেড়ে দে শয়তান বলে চিল্লাইলেই কি তোমাকে ছেড়ে দেবো?
না! না! না!
আজ তোমাকে বলতেই হবে।
কি নেই আমার?
লোহিতসাগরের ভারী লাল পানিতে জন্মানো লাল মাইক্রো-অরগানিজমের দোহাই।
আজ তোমাকে বলতেই হবে।
কি নেই আমার?
তুমি জানো না বললেই হবে?
আজ যে মনে মনে আমি মিশা সওদাগর আর ডিপজলের চেয়েও বেশি উগ্র।
আজ তো আমি হায়েনার চেয়ে বেশি ক্রোধন্মত্ত।
আজ তোমায় ছাড়বো না,
আস্ত চিবিয়ে খাবো, জ্বলে যাওয়া এই চিকেন উইং আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মত।
হাহ হাহ হাহ!
কোথায় পালাবে সুন্দরী?
১৫/৫/২০১৪
গাজীপুর।

recipe de দুঃখের ঝালফ্রাই

কেন তুমি এতো ভালো থাকো?
শিমুলেরা যখন ভিজে ভিজে ক্লান্ত হয়ে যায়,
তখনও তোমার মন ভালো থাকে,
তারা যখন ভিজে নরম হয়ে যায়,
তখনও তোমার মন ভালো থাকে।
আকাশে মেঘগুলো যদি হাতির আকার নেয়,
তখনও তোমার ভালো লাগে।
ভোরের স্নিগ্ধতা যখন মুগ্ধতায় রূপ নেয়
তখনও তোমার ভালো লাগে।
তখনও তোমার মন ভালো থাকে।
হৃদয়ে যখন ব্যথায় পচন ধরে,
তখনও তোমার মন ভালো থাকে,
এক টন ওজনের কষ্ট, কষ্টই মনে হয় না,
তখনও তোমার মন ভালো থাকে,
এতো সুখ কেনো তোমার???
কিসের অভাব?
দুঃখের?
এই নাও, হাতের পলিথিনের ব্যাগ,
আর ব্যাগ ভরা দুঃখ।
আজ রাতে মজা করে, ঝাল করে,
রান্না করে খাবো, ঠিকাছে?
১৫/৫/২০১৪
গাজীপুর।

জীবনের দ্বিতীয় পত্র ও একটি প্রেমপত্র

May 6 · Dhaka · Edited · 
প্রিয়তমা,
"জীবনের দ্বিতীয় পত্র" পরীক্ষা চলছে,
আর তোমার জন্য আমি অপেক্ষাই করে যাচ্ছি,
আমার লাল কলমের শিষে এক বিন্দু দূষিত রক্ত লেগেছে,
আর তাই, এই মোটা কাগজটার উপর দিযে টেনেই চলছে;
কারণ, জীবনের দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলছে।
তোমার অপেক্ষায় বসেই আছি আমি,
আর তুমি জানো, অপেক্ষার প্রহর কত দামী,
অপেক্ষার প্রহর বড়ই অদ্ভুত-
আমাকে বসিয়ে রেখে যে ৫ মিনিটের কথা বলে উঠেছিলে,
সেই ৫ মিনিট কি অপেক্ষার ৫ মিনিট?
নাকি কর্মব্যস্ত ৫ মিনিট, বুঝলাম না।
তাই, লাল কলমের শিষে লাগা দূষিত রক্ত টানছে,
টানতে তো হবেই-
কারণ্, জীবনের দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলছে।
পরীক্ষার কথা তুমি আর আগের মত জিগ্গেস করো না।
কেমন রাগী কন্ঠে, হাঁক ডেকে জিগ্গেস করো।
আমি পরীক্ষার্থী মানুষ, আমার উপর সদয় হও,
কারণ্, আমার জীবনের দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলছে।
পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছে, চাঁদের আলো কত প্রকার, কি কি?
আমি উত্তর দিয়েছি, ১. তোমার সাথে চাঁদের আলো,
২. তোমাকে ছাড়া চাঁদের আলো; দুই প্রকার।
আরো প্রশ্ন এসেছে, গত পরশু সন্ধ্যায় তোমার সাথে
ঘুরতে বেড়িয়ে যে জোনাকী পোকাটাকে টিপে মারলাম্,
তার বৈগ্গানিক নাম লিখ।
বলো, আমি কি এটা পারবো? কিভাবে?
তাই, হাপিয়ে উঠে চিঠি লিখতে বসলাম।
কবিতা ছাড়া কখনো তোমাকে ভাবিনি,
তোমাকে ছাড়া কোন স্বপ্নও আঁকিনি,
তবু, হৃদয়ের অলিন্দ নিলয়ের অলিগলিতে
ল্যাম্পপোস্টের মত জ্বলতে থাকা স্নায়ুকলাগুলোয়
যে ছন্দিত ইম্পালস,
তার সুর তোমার নাবালক মনের সুরে বাঁধা,
তোমার কথার অকুতিতে বাঁধা,
তোমার নিষ্প্রাণ চাহুনিতে বাঁধা।
কিছু করার নেই; ভুলে গেছ?
আমার জীবনের দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলছে।
তাই বলি-
"রক্তক্ষরণ অন্ত:পুরে,
ঢেউ ভাঙবে এই হৄদয় জুড়ে,
গাইবে তুমি প্রাণ খুলে,
মন ভেজাবো সুখে-
যদি এই বরষার জলে, অন্য কেউ ভেজে,
আর আড়াল থেকে লুকিয়ে তোমার মুখটি দেখে,
আমি সাইক্লোন হবো, মহাসমুদ্রে,
ডুবিয়ে মারবো তাকে।"
[এটা আমার সুর করা অসমাপ্ত গানের ২য় অন্তরা, আমারই লিখে শেষ করা লাগলো। তোমার হাতে তো সময় নেই।]
পরসংবাদ এই যে, মাথাটা ব্যাথা করছে,
ঢুলু ঢুলু চোখ ঢলে ঢলে পড়ছে।
ঘুমুতে হবে।
ঘুমুতে যাবার আগে একটা গান শুনবো-
"প্রিয়তমা,
তোর হৄদয় আকাশে যদি কালো মেঘ ভাসে,
অমি লিখব না আর প্রেমের কবিতা॥
প্রিয়তমা,
তোর ভ্রমর কালো চোখে যদি অশ্রু নেমে আসে,
আমি আঁকবো না আর সুখের ছবিটা॥"
© Bappy Pathan

আমি অপেক্ষায় আছি।
তোমার ৫ মিনিট শেষ হলে আমাকে জানিয়ো।
আমি ঘুমুতে গেলাম।
ইতি-
তোমার আমি
বি: দ্র:
মাঝে মাঝে মাশরুমের স্যুপ খাবে। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আর তোমার গোলাপী অধরযুগলের যত্ন নিয়ো, রোদে কম বের হবে।

ইচ্ছে

Benxir Ahmed listening to দীর্র্ঘশ্বাস
May 1 · Dhaka · 
আমারও ইচ্ছে করে তোমার মত করে দৌড়ে চলে যাই,
দৌড়ে চলে যাই ওই মানুষটার কাছে,
মনের মানুষটার কাছে।
আমারও ইচ্ছে করে তোমার মত করে পড়ে থাকি অনাদরে অবহেলায়,
পড়ে থাকি অনাদরে অবহেলায় তোমার ইনবক্সে,
তবুও।
আমারও ইচ্ছে করে তোমার মত জুলু জুলু চোখে তাকাই,
জুলু জুলু চোখে তাকাই তোমার দিকে,
আলতো করে।
তবুও তুমি বুঝবে না।
কারণ, তোমারও ইচ্ছে করে তোমার মত করে দৌড়ে চলে যেতে,
দৌড়ে চলে যেতে ওই মানুষটার কাছে,
মনের মানুষটার কাছে।
দীর্র্ঘশ্বাস॥

অপরাজিতার ঘ্রাণ

বেনজীর আহমেদ
সহস্র পদ্মের মাঝে তোমার ঘ্রাণ নিতে গিয়ে দেখি
তুমি অপরাজিতা ফুল,
লক্ষ লক্ষ আত্মার ভীড়ে তুমি সুখের ফাগুন।
হাটতে হাটতে ক্লান্ত এই পথিকের গলায় তুমি
এক গেলাস ঠান্ডা পানি।
শুনছো,
তুমি কি এই পাষানের চোখের এক বিন্দু জল হতে পারবে?
তুমি কি অতিকাংখিত বরষার মেঘ হতে পারবে?
তুমি কি আমার খুব কাছে এসে বসবে?
খুব কাছে।
মিথ্যে আশ্বাস কিংবা কোন সংকোচ নয়,
দুস্তর দৃঢ় কোন সংকল্পও নয়,
তোমার ঘ্রাণে,
ওগো অপরাজিতা।
২৫/৪/২০১৪
গাজীপুর।

কেন?

Benxir Ahmed listening to হৃদয়ের স্পন্দন
April 14 · 
কেন?
তোমাকে এত ভালো লেগে গেল কেন,
বুঝলাম না৷
তোমার দেখানো পথে আগে কেন হাঁটলাম না,
তোমার নাকের ঘামটা মুছে হাতটা ধরে কাঁপলাম না,
"তোমার কেশের গন্ধে কখন", মাতাল হয়ে ভাসলাম না৷
স্মৃতির পাতায়, মনের খাতায়, রেখে দিলাম স্নিগ্ধ গোলাপ,
তোমার নাম উল্লসিত, আজ জ্বরের ঘোরে দীর্ঘ প্রলাপ৷

ভুলে গেছো

বেনজীর আহমেদ
বলো তো আমি কি বলবো?
তুমি কি বুঝেছো যে, তুমি ভুলেই গেছো?
তুমি ভুলেই গেছো, যে নীলনদের পানির রঙ নীল নয়৷
তুমি ভুলেই গেছো, মল্লিকা বলে কেউ নেই;
তুমি ভুলেই গেছো, প্রদীপের নিচের অন্ধকারকে৷
তুমি ভুলে গেছো, বসফরাস প্রণালীতে পা ডুবিয়ে বসতে,
আর আমার হাতটি ধরে হাসতে,
কোন এক রহস্যজনক রাতে হেলিকপ্টারে চড়ে
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ঘুরে আসতে৷
আরো ভুলে গেছো, এক বিকেলে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া,
সুন্দরবন থেকে ময়নার দ্বীপে নৌকোয় করে ভাসতে,
স্নিগ্ধতায় - মুগ্ধতায় - নিমগ্নতায়৷
তুমি ভুলে গেছো, আমার ঘ্রাণ,
হৃদয়ের অন্তস্থলের নোনতা প্রাণ,
সলিল ভাবনা, বিমোহিত টানছে
সবচেয়ে বড় কথা, তুমি ভাবতে ভুলে গেছো৷
এ হতে পারে না৷
এ হতে পারে না৷
যখন শূন্য থেকে নামবে অপলক জলধারা,
তখন, হবে কি বাঁধনহারা?
ছিহ!
তুমি কাঁদতেও ভুলে গেছো?

তুমি শুধু দুঃখ শুনতে পারো


Benxir Ahmed feeling down
April 5 · 
 বেনজীর আহমেদ
আপাতত তুিম শুধু দুঃখ শুনতে পারো,
কেউ যে কাজটা করে না,
আজ তুমিই সেটা করো,
তুমি কিছু দুঃখ শুনতে পারো৷
পানির অপর নাম জীবন,
আর হোয়াংহো একটি দুঃখের নাম;
ঠিক তেমনই, তুমি আমার সমার্থক,
আবার তুমিই আমার দুঃখ৷
তুমি হোয়াংহো নদী, আমার অশ্রুধারা৷
তাই, তুমি কিছূ করতে পারবে না৷
তুমি শুধু কিছু কষ্ট শুনতে পারো৷
তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে,
আজ মহীরুহে রূপান্তর আমার৷
এতো অপেক্ষা করেও আজ,
তেপান্তরের প্রান্তরে দাঁড়িয়ে৷
নিজেকে মজনু-বৃদ্ধবিশারদ মনে হচ্ছে৷

নীল বুক টিয়া


লাল বুক টিয়া, নীল বুক টিয়া-
থেকো না তুমি আড়ালে,
ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না-
খাবে না তোমায় বাড়ালে।
যত ছিলো সাধ, যত আহ্লাদ-
আজ করো তা সীমাহীণ,
যেদিকে পালাও। যেথা যেতে চাও-
দিলাম ছেড়ে বাধাহীণ।
হিমালয় নয়, সাহারা নয়-
থাকবে আমার নীল বুকে,
লাল বুক টিয়া, নীল বুক টিয়া-
থাকতে চাই নীল সুখে।
কত মমতাজ, কত শাজাহান-
যমুনার বুকে একে দিলো জান,
নীল বুক টিয়া, ছোট মোর প্রাণ-
হয়তো করবো না কুরবান।
তাই,
তোমারই জন্য লিখেছি এই কবিতা;
সাথে এনেছি তোমারই জন্য,
এই নীল অপরাজিতা।।
১২.১১.২০০৬

অনুনাদ

শ্রাবণের অপেক্ষা তৃষ্ণা ধরায়,
অন্তরঙ্গ ধৃষ্টতায়;
সকল আধারে কর্ণপাত
আলোর রঙিন বর্ণবাদ
তুচ্ছ কান্নার অনুনাদ,
ভুল ভেঙেছে।
নষ্ট শরীর, নষ্ট মন,
মনের বনে সন্তরণ
তুমিহীণ জীবন-যাপন
কিছুখন॥
আক্ষরিক কোন কল্পনায়,
স্মৃতির কোন ছেড়া পাতায়,
তোমার নিষ্পাপতায়,
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ॥
আন্তরিক নিমগ্নতায়,
আরামলোলুপ নিস্তব্ধতায়,
আনন্দের মৃত্যু ঘটায়
প্রাণের ব্যাপণ॥
09, January. 2013
Gazipur.

পারলাম না

Benxir Ahmed feeling frustrated
তোমাকে নিজের বাহুডোরে বাঁধতে পারলাম না৷
ইউফ্রেটিসের শত শত কোটি ঘনফুট পানি
চোখের কোণে ধরতে পারলাম না৷
তোমার শুষ্ক হৃদয়ে মরুদ্যান হতে পারলাম না৷
তোমার তীব্র রঙের নেশায় দেবদাস হতে পারলাম না৷
তোমার নতুন জীবনে আজ পুরোনো হতে পারলাম না৷
অনন্ত ছুটে চলা পথিক হতে পারলাম না৷
মূক-বধির রয়ে গেলাম, সঠিক হতে পারলাম না৷
অস্তাচলে তোমার হাতটি ধরতে আমি পারলাম না৷
অন্ধ হয়ে বন্ধ আমি, প্রেমিক হতে পারলাম না৷
সহস্রাধিক মনের ভীড়ে, তোমার হতে পারলাম না৷
নীলচে কালোর চক্ষুশুলে উপশম হতে পারলাম না৷
আমার মনের কালচে কোণে, আলো জ্বালতে পারলাম না৷
তোমার মত মহৎ হয়ে প্রিয়জন ত্যাগ? পারলাম না৷
পারলাম না৷
তোমার প্রেমে দেবদাস হতে পারলাম না৷

মায়াবতী কাব্যময়ী

Benxir Ahmed feeling lonely
জ্বরের ঘোরে আমায় জড়িয়ে ধরেছিলে মায়ার বাধনে,
অজস্র রাঁধাচূড়ার পাঁপড়ির স্রোতে ভাসিয়েছিলে, যতনে,
প্রতি ডিগ্রী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে তোমার প্রলাপের মাত্রা বেড়ে যেতো,
প্রতি মূহুর্তে তোমাকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর,
দুর্বলতর থেকে দুর্বলতম মনে হতো৷
সুদুর থেকে মেঘ পাঠিয়েছিলে, আমায় ভেজাবে বলে,
অন্ধকারে পথ হাতরে আমার হাতটি ধরেছিলে,
আমারও অনেক জ্বর আসা উচিৎ ছিলো,
তাহলে হয়তো বুঝতাম, তুমি এতো সুখী কেন?
অন্ধ হয়ে তোমার বুকে মাথা রেখে হৃদস্পন্দন শুনেছিলাম,
বৃষ্টির শব্দ শুনেছিলাম৷

আমাকে একা করে, তুমি কি খুব সুখে আছো, মায়াবতী?
তুমি হয়তো জানো না, এতো ভালো তোমায় আর কেউ বাসবে কি না?
তুমি হয়তো জানো না, এতো আদুরে কেউ তোমার সাথে হবে কিনা?
তুমি জানো না৷
খুব কষ্টে আছি, কাব্যময়ী,
আমাকে কষ্ট দিও না৷
ফেনিল সাগরে, লাস্যময়ী,
বিষ ঢেলে দিও না৷

এসো মাতি উল্লাসে

হ্যাঁ।
আমি তো বর্বর৷
আমি হানাদার হয়ে করবো
আবার উল্লাস৷
আমি জান্তব হায়েনা,
মেড ইন চায়না৷
আমি করবো আবার উল্লাস৷
আমি ক্ষমতার লোভে মাতোয়ারা এক শ্বাপদ লজ্জাহীন৷
আমি এক সভ্য মানুষ৷
সাধারণ এই পৃথিবীতে আমি এক নির্বোধ নাবালক,
তাই, চুপ করে মুখে আংগুল, আমি চেয়ে থাকি অপলক৷
অন্ধের মত নির্দয় পথে নেমে গেছি আজকে,
সত্য খুঁজে নির্বাক হয়ে, উঠেছি আঁতকে।
আমার বাড়ীর চাকর এসে বললো আমাকে,
"বাড়ীর বেশীরভাগের মালিক আমায় বানিয়ে দে।"
আমি বললাম, "বলিস কি রে, আমি অনেক বোকা!
আজ আমাকে পেয়ে গিয়েছিস, তাই বলে দিবি ধোঁকা?"
খাবো আমি আজকে ধোঁকা, সবুজ রঙ্গীন ভোরে,
কাল সকালটা দেখতে চাই, অন্য রকম করে।
তোমার জন্য একই সাঁজা, আজকে শুনে রাখো,
হ্যাঁ।
আমি তো বর্বর৷
আমি হানাদার হয়ে করবো আবার উল্লাস৷
আমি জান্তব হায়েনা,
মেড ইন চায়না৷
আমি করবো আবার উল্লাস৷
আজ আমি এই সভ্য নামের অসভ্য সমাজের সদস্য হতে চাই;
আজ আমি উল্লাস করবো৷
আজ আমি মেতে উঠবো৷
কারণ, আজ আমি বর্বর হবো, নিঃশব্দে৷
বাংলাদেশ
১০ ডিসেম্বর, ২০১৩।

গভীর রাতঃ অদ্ভুত আচরণ


মাঝরাতে হঠাৎই ঘুম ভেঙে যাবে,
হয়তো কোন এক নাম না জানা দুঃস্বপ্নে;
তখন আর ভাববার কিছু থাকবে না,
তুমি বাদে৷
তোমার পাঠানো মেঘে হয়তো এখন অন্য কোথাও বৃষ্টি হয়,
তোমার হৃদয় এখন হয়তো,
অন্য রঙে সিক্ত হয়৷
কেন তুমি আগুন জ্বালাতে?
কেন তুমি ফাগুন বাড়াতে?
আমি কি অদ্ভুত আচরণ করছি?
দেখেছো প্রিয়া?
তোমার জন্য কত অবনতি?
আমি আসলেই অদ্ভুত আচরণ করছি৷

পার্পল


Benxir Ahmed watching purple
December 5, 2013 · Dhaka · 
চোখে রঙ্গীন চশমা লাগিয়েছিলাম,
লাল আর নীলে মিলে যে পার্পল হয়েছিলো,
বুঝতে বড় দেরী করেছিলাম।
চোখে একটা পার্পল চশমা লাগিয়েছিলাম।
চারিদিকে রঙের হোলি খেলায় মেতেছিলাম,
আসল রংটা হারিয়েই ফেলেছিলাম,
হাতে ছোপ ছোপ রক্ত লেগেছিলো,
দেখিনি।
কারণ, চোখে একটা রঙ্গীন চশমা লাগিয়েছিলাম।
রক্তের পার্পল রঙ তোমাকে মোহাবিষ্ট করে ফেলবে,
রাজবংশের জামা কাপড়ের মত তোমাকে বন্দী করে ফেলবে,
সেনা শাসনের মত চলবে তুমি,
"অনেক উন্নতি, কিন্তু স্বাধীনতা নেই।"
মাঝে মাঝেই পাবে পার্পল পদক।
কোথায় যেন হারিয়ে যাবে তোমার মনের অন্তরাল
হারিয়ে তুমি খুজে ফিরবে তোমার মনের ঐকতান;
বড্ড দেরী হয়ে গেছে।
চোখের রক্তবর্ণ পার্পল চশমাটা খুলে দাও আমায়,
আমি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই,
আমি এখনো স্বাধীন নই।
কারণ একটাই;
চোখে একটা পার্পল চশমা লাগিয়েছিলাম।

অপেক্ষায়...

বিধাতার কাছে তুলিয়াছি হাত,
চলে যাবো কোন দ্বীপে;
তুমি নিয়া ফেলিয়াছো মোরে,
এ কোন অন্তরীপে।
আজ্ঞাবাহী মহাজনে হায়,
সুদের হিসাব চায়;
বুঝিতে পারে নি এই হিসেবের,
চুকিতে হইবে দায়।
ধীরে ধীরে বাড়ে নিস্প্রেষণ আর,
ধীরে ধীরে বাড়ে ব্যথা;
বিস্ফোরিত হয়ে যাবে সব,
হারিয়ে ফেলবে কথা।
অপেক্ষায়...

ধীরে বহ রাত্রি

Benxir Ahmed listening to Night
October 20, 2013 · Dhaka · 
লোভাতুর চোখে বসে থাকি, এই নৃশংস ভোরে;
ভোরের পাখির ডাক শুনার খদ্দের কমে গেছে,
নিষ্ঠুর চোখে বসে থাকি, এই আবছায়ায়;
ভোরে কাজ শুরু করে না কেউ আর।
অনাদি অনন্তকাল ধরে অপেক্ষায় ছিলাম,
চির বরষার,
অথবা চির বসন্তের।
অপেক্ষার প্রহর বুঝি দেরী করে কাটে।
অনেক ধীরে।
অন্তরাত্মার দংশনে নিশুতির চাপা কান্না শোনাও বন্ধ করে দিয়েছে সবাই,
সবাই ঘুমায় নসিকারন্ধ্রের অনুভূতিকে তেল দিয়ে ক্রুঢ় করে;
তবে, এখনো এই রাত আগেরই মত গোঙ্গায়,
কিন্তু, রাতের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়ার মত কেউ নেই।

Silent birds

Benxir Ahmed drinking মাইকেল মধুসূদন দত্ত
October 20, 2013 · Dhaka · 

Birds fly away.
In the name of God,
Some of them fly away.
Some of them chirps.
Inside a blow of a wind,
Chirps diminished and vanishes.
Birds remain silent,
Some of them remain
very very silent.
When bridges are gone,
tears are shed;
Each and every bird
should remain silent.
Then soft, fragile inside of the bird
Converts into a hideous creature.
They run, they bite;
They kill, they fight;
They destroy, they hide;
Then ruin and ride.
So,
World.
Be aware.
Silent birds are not so sweet;
They are not cute anymore.
They will ride.
May be they will ride you.
::::::::::::::::::::::::::::::::::

হাহাকার

Benxir Ahmed feeling নদী নদী
October 19, 2013 · Dhaka · 
এই বুকটা চিড়ে যদি দেখানো যেতো কত বসফরাস প্রণালী,
কত হিমবাহ গলা মন্দাকিণী, স্বরস্বতী বয়ে গেছে,
কত উপহাস করেছি;
কত হাহাকার করেছি।

যা জানো নি


Benxir Ahmed feeling মহামতি again...
October 18, 2013 · Dhaka · Edited · 
কোন কল্পনা থেকে নয়,
আমি এসেছিলাম তোমার কোলে মাথা রাখতে, কোন বাস্তব ঠিকানা থেকে;
আমি এসেছিলাম তোমার হাতে হাত রেখে বলতে, "প্রিয়া, এই নাও, আমি তোমার।"
আমি এনেছিলাম কিছুটা বেদনা, কিছুটা সুখ, কিছুটা বৃষ্টি;
সাথে এনেছিলাম কিছু আদর, কিছু দুঃখ, কিছু সৃষ্টি।
কখনো তোমার মানা ছিলো না তাতে, কখনোই না।
মাঝে মাঝে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে, বলতে, "ঘুমাও তুমি, ঘুমাও।"
আরো বলতে, "এই মাথায় যত দুঃখ আছে, ঝেঁটিয়ে তাদের নামাও।"
আমি বলতাম,"যায় না, লক্ষ্মী, যায় না তাদের ভোলা,
এসো অন্য কথা বলি, দুখগুলো থাক তোলা।"
নিদারুণ এই দুনিয়ার তরে বিচিত্র কত গল্প,
অকপটে কিছু স্বীকার করছি, বুকটা কাঁপেনি অল্প,
আমাকে তুমি বলতে পারবে, যেসব তুমি জানো;
যা জানো না তাই দিয়ে তুমি অনেক আঘাত হানো।